Dr. Aafia Siddiqui


বাইডেনের ক্ষমায় শিগগিরই মুক্তি পেতে পারেন ডক্টর আফিয়া সিদ্দিকী

 মার্কিন কারাগারে বন্দি পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ডক্টর আফিয়া সিদ্দিকী ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের আগে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা চেয়েছেন। আইনজীবী ক্লাইভ স্ট্যাফোর্ডের মাধ্যমে এই আবেদন করেন আফিয়া সিদ্দিকী। আবেদনের সাথে ৭৬ হাজার ৫০০ শব্দের একটি দলিলগুচ্ছ দাখিল করা হয়েছে। এসব নথি আফিয়া সিদ্দিকীকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন তাকে আইনি সহায়তাকারী দল। খবর সামা টিভির।

Dr. Aafia Siddiqui

ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডক্টর সিদ্দিকী আশা প্রকাশ করেন, দাখিল করা নতুন এসব প্রমাণ তাকে মুক্তি দেবে। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রতিদিন অন্যায়ের শিকার হয়েছি এবং যন্ত্রণা সহ্য করেছি। এটা সহজ ছিল না। তবে ইনশাআল্লাহ, একদিন আমি এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব।’’আফিয়া সিদ্দিকীর আইনজীবী ক্লাইভ স্ট্যাফোর্ডও তার মামলার সাম্প্রতিক ঘটনাবলী তুলে ধরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।পাকিস্তানি এই স্নায়ুবিজ্ঞানীর আপিলের সময়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে এই আবেদন করা হয়েছে। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ আগামী ২০ জানুয়ারি।


খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইতোমধ্যেই তার ছেলে সহ ৩৯ জনকে ক্ষমা করেছেন।৫২ বছর বয়সী ডক্টর সিদ্দিকীকে ২০১০ সালে আফগানিস্তানে একজন এফবিআই এজেন্টকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আল-কায়েদা নেতৃত্বের সাথে তার সম্পর্ক থাকার অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করা হয় এবং ২০১০ সাল থেকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কারাবন্দী আছেন।এদিকে, আফিয়াকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মুক্তি দেওয়া হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তার মুক্তির তদবিরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলের সদস্য অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইকবাল জাইদি।

Story Aafia Siddiqui [ Video Clip Tragedy of Aafia Siddiqui]

Click Here  [ Tragic history of Dr. Aafia Siddiqui]

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর জাইদি বলেছেন, ডক্টর আফিয়া গুরুতর স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ভুগছেন। বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার (২০ জানুয়ারি) ক্ষমতা ছাড়ার আগে তার সাজা কমিয়ে দেবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, যদি বাইডেন পদক্ষেপ না নেন, তাহলে পাকিস্তান সরকার বিষয়টি সমাধানের জন্য নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

ডক্টর জাইদি আরও জানান, তিন সদস্যের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ডক্টর আফিয়ার মুক্তির তদবিরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। যদিও তাদের লক্ষ্য ছিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা; কিন্তু ভিসা পেতে বিলম্ব হওয়ার কারণে তাদের বৈঠকটি হয়নি। এর পরিবর্তে প্রতিনিধিদল বেশ কয়েকজন সিনেটর এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।এছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বাইডেনকে চিঠি লিখে মানবিক কারণে ডক্টর আফিয়ার মুক্তি মঞ্জুর করার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ১৬ বছর ধরে কারাদণ্ড ভোগ করছেন ডক্টর আফিয়া। এটি এমন একটি অপরাধ যার জন্য মার্কিন আইনে সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর। তবে তাকে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যা বিরল।ডক্টর জাইদি আরও বলেন, ড. আফিয়া ২০ বছর ধরে তার সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। যদিও তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে পরিচিত নন তবে ৯৯ শতাংশ পাকিস্তানি এবং মুসলিম বিশ্বের অনেকেই তার মামলার বিষয়ে অবগত বলেও জানান জাইদি। তিনি আরও বলেন, তার মুক্তি পাকিস্তানের ২৫ কোটি নাগরিক এবং বিশ্বব্যাপী ২ বিলিয়ন মুসলিম জনসংখ্যার মাঝে আমেরিকার ভাবমূর্তি উন্নত করবে।

 

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের মার্চ মাসে করাচিতে তিন সন্তানসহ ড. আফিয়াকে আটক করা হয়। এর পরের পাঁচ বছর তিনি নিখোঁজ ছিলেন যদিও ২০০৮ সালে জানা যায়, তিনি আফগানিস্তানে বন্দি ছিলেন। পরবর্তীতে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা হয়। তার দুই সন্তান আহমেদ এবং মরিয়ম যথাক্রমে ২০০৮ এবং ২০১০ সালে মুক্তি পায়। কিন্তু আরেক ছেলে সুলাইমান কোথায় আছেন তা এখনও অজানা।

[Collect report from Inkilab desk]


Comments

Post a Comment